এই ওয়েবপেজটি নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য এবং এর দ্বারা প্রভাবিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিবেদিত। আপনার শরীরের প্রতিটি অংশ একসাথে কাজ করে যাতে আপনি সুস্থ থাকতে পারেন। আর তাই যৌন স্বাস্থ্য আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

আপনার প্রজনন তন্ত্র কি দ্বারা গঠিত?

নারীর প্রজনন তন্ত্রের নানা ধরনের কাজ রয়েছে। এই প্রজনন তন্ত্রের মাধ্যমে একজন নারী যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন, সন্তান জন্মদান করতে পারেন এবং নিয়মিত মাসিক বা ঋতুস্রাব অভিজ্ঞতা করেন।

নারীর প্রজনন তন্ত্র বংশ বিস্তার কিংবা সন্তান জন্মদানের জন্য প্রয়োজনীয় ডিম্বাণু উৎপাদন করে। যখন একটি নারী গর্ভবতী হয়, তখন গর্ভধারণ ঘটতে হয়। গর্ভধারণ হল, যখন একজন পুরুষের শুক্রাণু একজন নারীর ডিম্বাণুকে  নিষিক্ত (Fertilize) করে, যা ফেলোপিয়ান নালি (Fallopian Tube)-এর মধ্যে ঘটে থাকে।

নিষিক্ত ডিম্বাণুর পরবর্তী ধাপ হলো এটি জরায়ুর আস্তরণে নিজেকে সংযুক্ত করে, এবং তখনই গর্ভধারণের প্রথম পর্যায় শুরু হয়। যদি নিষিক্ত (Fertilization) না হয়, তাহলে নারীর ঋতুস্রাব বা মাসিক হবে। যার মানে হলো জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আস্তরণ যোনির (Vagina-এর) মাধ্যমে বের হয়ে যাবে। এছাড়াও, নারীর প্রজনন তন্ত্র তার যৌন হরমোন উৎপন্ন করে যা প্রজনন চক্রকে চলমান রাখে। 


কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা নারীর প্রজনন ব্যবস্থা তৈরি? 
মহিলা প্রজনন ব্যবস্থা বিভিন্ন বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গ দ্বারা গঠিত, নীচে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

বাহ্যিক অঙ্গঃ

  • ল্যাবিয়া মেজোরা (Labia Majora): ল্যাবিয়া মেজোরা (বৃহদোষ্ঠ) হল বড় ঠোঁটের মত দেখতে ত্বক যা আপনার যোনিকে বাহির থেকে আবৃত করে রাখে। একজন নারীর যখন মাসিক বা ঋতুস্রাব শুরু হয়, তখন ল্যাবিয়া মেজোরার ত্বকে পশম উঠতে শুরু করে- যাতে ঘাম ও তেল নিঃসরণকারী গ্রন্থিও থাকে। 

    • আপনার মুখের ত্বকের মতো, এই ত্বকে কখনও কখনও পিম্পল বা ইনগ্রোউন লোম থাকতে পারে। এর মানে এই নয় যে আপনার যৌনবাহিত রোগ আছে!

  • ল্যাবিয়া মাইনোরা (Labia Minora): ল্যাবিয়া মাইনোরা (ক্ষুদ্রোষ্ঠ) থাকে ল্যাবিয়া মেজোরার অভ্যন্তরে। প্রত্যেক নারীভেদে ল্যাবিয়া মাইনোরার আকার ছোট বা বড় কিংবা ভিন্ন হতে পারে। এটি আপনার যোনির প্রবেশপথে আবৃত থাকে। এই প্রবেশপথ সরাসরি জরায়ুর সাথে সংযুক্ত এবং তার উপরেই রয়েছে মুত্রনালী যা মুত্র থলির সাথে সংযুক্ত। 

    • আপনার ল্যাবিয়ার রং গাঢ় হওয়া স্বাভাবিক। বিশেষ করে যদি আপনার ত্বকের রং বাদামী হয়ে থাকে, তবে এটি কালচে কিংবা কালোর কাছাকাছি রং হতে পারে। এটি লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই এবং আপনার ত্বক ব্লিচ করা উচিত নয়!

  • ক্লিটোরিস (Clitoris): ক্লিটোরিস (ভগাঙ্কুর) হল একটি সংবেদনশীল মাংসপিন্ড। আপনার ল্যাবিয়া মাইনোরা এই ক্লিটোরিস থেকে উৎপন্ন হয়ে যোনির প্রবেশপথ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। ক্লিটোরিসটি একটি পাতলা ত্বক দ্বারা আবৃত থাকে। 

    • ক্লিটোরিসে উদ্দীপনা ঘটলে অনেক নারী অরগ্যাজম (Orgasm) অনুভব করেন। 

  • যোনি পথ (Vaginal Opening): যোনি পথ দিয়ে আপনার মাসিকের রক্ত বের হয়। এই একই পথে সন্তান প্রসবিত হয়। 

  • যোনি পর্দা (Hymen): আপনার যোনি পথের শুরুতে যে পাতলা পর্দা বা টিস্যু থাকে তাকেই যোনি পর্দা বলে। এটি মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময়ে মেয়ে শিশুদের দেহে তৈরি হয় এবং জন্মের সময় এটি উপস্থিত থাকে। 

    • যোনি পর্দা কখনই নারীর কুমারিত্ব (Virginity) সনাক্ত করতে পারে না। 

অভ্যন্তরীণ অঙ্গ

  • যোনি (Vagina): যোনি হল একটি রাস্তা যা জরায়ু (uterus), জরায়ুর নীচের অংশ, এবং শরীরের বাইরের অংশের সাথে মিলিত হয়। এই রাস্তাটি সন্তান প্রসবের সময় প্রশস্ত হতে পারে এবং পরবর্তীতে ট্যাম্পনের মতো সরু কিছু ধরে রাখার জন্য আবার সঙ্কুচিত হতে পারে। যোনি পথে শ্লেষ্মা ঝিল্লি (Mucus Membrane) থাকে যা এটিকে আর্দ্র (moist) রাখতে সহায়তা করে।

    • একজন মহিলার একাধিক সঙ্গী থাকে, তার মানে এই নয় যে তার যোনিপথ  ঢিলা হয়ে গেছে। ঠিক যেমনটি সন্তান প্রসবের পরে যোনি ঢিলা হয় না। নারীদের যোনি থেকে কখনও প্রস্রাব হয় না।

  • জরায়ুমুখ (Cervix): আপনার সার্ভিক্স হল আপনার জরায়ুর সর্বনিম্ন অংশ। জরায়ুর সবচেয়ে নিচে আপনার জরায়ুমুখ (Cervix) অবস্থান করে। এর মাঝখানে একটি ছিদ্র রয়েছে যা শুক্রাণুদের গর্ভে প্রবেশ করতে এবং মাসিকের রক্ত ​​বের হয়ে সাহায্য করে। সন্তার প্রসবের সময় যোনিপথ দিয়ে শিশুকে বের হতে দেওয়ার জন্য জরায়ুমুখ খুলে যায়। 

  • জরায়ু (Uterus): আপনার জরায়ু সেই অঙ্গ যা গর্ভাবস্থায় একটি ভ্রূণকে (fetus) ধারণ করে। আপনার জরায়ু দুটি ভাগে বিভক্ত: জরায়ুমুখ (Cervix) এবং কর্পাস( Corpus)। এই কর্পাস আপনার জরায়ুর বৃহৎ অংশ যা গর্ভাবস্থায় বড় হয়।

  • ডিম্বাশয় (Ovaries): ডিম্বাশয় হল ছোট, ডিম্বাকৃতির গ্রন্থি যা আপনার জরায়ুর উভয় পাশে অবস্থিত। এই ডিম্বাশয়েই  ডিম এবং অন্যান্য হরমোন উৎপন্ন হয়ে থাকে।

  • গর্ভনালি (Fallopian Tubes): এগুলো সরু নালি বা টিউবের মত দেখতে হয় যা জরায়ুর উপরিভাগ অংশে সংযুক্ত থাকে। এই গর্ভনালি (Fallopian Tubes)-এর মাধ্যমে ডিম্বাশয় থেকে ডিম উৎপন্ন হয়ে জরায়ুতে প্রবেশ করে। গর্ভনালিতেই সাধারণত শুক্রাণু দ্বারা একটি ডিম নিষিক্ত (Fertilized) হয়ে থাকে। তারপর সেই নিষিক্ত ডিম্বাণু (Fertilized Egg) জরায়ুতে প্রবেশ করে যা পরবর্তীতে আপনার জরায়ুর আস্তরণের মধ্যে নিজেকে স্থাপন করে। 


ঋতুস্রাব বা মাসিক কি?


প্রতি মাসে যখন আপনার জরায়ুর আস্তরন ঝরে পড়ে সেই সময়টাকে মাসিক বলে। মাসিকের রক্তের সাথে আপনার জরায়ুর ভিতর থেকে আংশিক রক্ত এবং আংশিক টিস্যু - সার্ভিক্সের মাধ্যমে যোনিপথ দিয়ে আপনার শরীরের বাইরে প্রবাহিত হয়। 11 বছর বয়স থেকে মেয়েদের সাধারণত মাসিক শুরু হতে পারে।

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য: আপনি যদি একজন নারী হন এবং ১৭ বছর বয়সের মধ্যে আপনার মাসিক না হয়ে থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

প্রাপ্ত বয়স্ক নারী এবং কিশোরীদের মাসিক শুরু হওয়ার দিনগুলিতে কিছুটা অস্বস্তি অনুভব হওয়া স্বাভাবিক। মাসিক শুরু হবার আগের এই উপসর্গগুলোকে প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS) বলে। এর মধ্যে শারীরিক এবং মানসিক উভয় উপসর্গ রয়েছে যা অনেক প্রাপ্ত বয়স্ক নারী এবং কিশোরী তাদের মাসিকের ঠিক আগে থেকেই অনুভব করে থাকে।  যেমনঃ

ব্রণ

ভারী অনুভব করা 

ক্লান্তি

পিঠে ব্যথা

স্তনে ব্যথা

মাথাব্যথা

কোষ্ঠকাঠিন্য

ডায়রিয়া

অতিরিক্ত ক্ষুধা

হতাশা

বিরক্তি বোধ কিংবা খিটখিটে মেজাজ 

মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা কিংবা চাপ সামলাতে না পারা 

প্রিমেন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS) সাধারণত একটি মেয়ের মাসিকের ৭ দিন আগে থেকে দেখা দেয় এবং মাসিক শুরু হওয়ার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।

অনেক নারীর মাসিকের প্রথম কয়েক দিনেও তলপেটে ব্যথা (Cramp) হয় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের কারণে। এটি দেহের অভ্যন্তরে উৎপাদিত হওয়া এক ধরনের  রাসায়নিক পদার্থ যা জরায়ুতে মসৃণ পেশি তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে পিরিয়ডের ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের মতোই বেদনাদায়ক হতে পারে!

আপনার পিরিয়ড অনিয়মিত হলে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের(গাইনোকোলজিস্টের) সাথে পরামর্শ করুন। অনিয়মিত মাসিকের কিছু উদাহরণ হল:

  • পিরিয়ড ২১ দিনের কম বা ৩৫ দিনের বেশি ব্যবধানে ঘটে৷

  • তিন মাস (বা ৯০ দিন) মাসিক না হওয়া।

  • মাসিকের প্রবাহ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বা কম হওয়া।

  • মাসিকের সময় যদি রক্তক্ষরণ যদি ৭ দিনের বেশি স্থায়ী হয়।

  • মাসিকের সাথে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্র্যাম্পিং, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

  • মাসিক চলাকালিন সময়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্তক্ষরণ কিংবা বেশি রক্তপাত।

 নারীদের যৌন হরমোন কি?

নারীদের প্রধান যৌন হরমোন হল এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন, যা মূলত ডিম্বাশয় দ্বারা উত্পাদিত হয়:

  • এস্ট্রোজেন (Estrogen): এস্ট্রোজেন একটি যৌন হরমোন যা প্রজনন এবং যৌনতা বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এস্ট্রোজেন দ্বিতীয় লিঙ্গ বৈশিষ্ট্যের বিকাশের জন্য দায়ী, যেমন স্তন এবং নিতম্ব। সেইসাথে মাসিক, গর্ভধারণ এবং মেনোপজ (Menopause) বা রজোনিবৃত্তি ঘটাতেও এই হরমোন ভূমিকা পালন করে। এস্ট্রোজেন হাড়কে সুরক্ষিত রাখে এবং হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালনকারী ধমনী (Coronary Artery)-তে রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।

  • প্রোজেস্টেরন (Progesterone): ডিম্বাশয়, অন্তঃস্রাবি গ্রন্থি এবং গর্ভের ফুল (Placenta)  দ্বারা উৎপাদিত হয়।

  • টেস্টোস্টেরন(Testosterone): পুরুষের মত নারীরাও সামান্য পরিমাণে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে থাকে।

মাসিক চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য হরমোনগুলির মধ্যে রয়েছে ফলিকল উদ্দীপক হরমোন (Follicle-stimulating Hormone) এবং লুটেইনাইজিং হরমোন (Luteinizing Hormone)।

নারীরা কি কি প্রজনন জনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে? 

পুরুষদের মতো, মহিলারাও কিছু প্রজনন জনিত স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগের সম্মুখীন হতে পারেন। এই শর্তগুলির মধ্যে কয়েকটি হল:

  • পিসিওএস (PCOS), বা পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিন্ড্রোম (Polycystic ovary syndrome): এটি একটি হরমোনজনিত রোগ যা আপনার ডিম্বাশয়কে (যে অঙ্গ দ্বারা ডিম্বানু উৎপন্ন হয়) প্রভাবিত করে। এটি বন্ধ্যাত্বের অন্যতম সাধারণ কারণ।

    • PCOS যা করতে পারে:

    • আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।  

    • ব্রণ এবং দেহে ও মুখে লোম দেখা দিতে পারে। 

    • ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

  • PCOS-এর কারণে ডিম্বাশয়ের বাইরের প্রান্ত বরাবর অনেক ছোট পানি ভর্তি গোটা তৈরি হয়। এগুলিকে সিস্ট (Cyst) বলে। ছোট তরল-ভর্তি সিস্টে অপরিপক্ক ডিম্বাণু থাকে যাকে বীজকোষ (Follicles) বলা হয়। ফলিকলগুলি নিয়মিত ডিম্বাণু নিঃসরণ করতে ব্যর্থ হয়।

  • PCOS এর সঠিক কারণ অজানা। প্রাথমিকভাবে এই রোগ নির্ণয় করা গেলে ওজন কমানোর পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে। যা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যজনিত জটিলতার ঝুঁকি কমাতে পারে যেমন টাইপ 2 ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ।

  • এন্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis): এটি একটি প্রায়শই-বেদনাদায়ক অবস্থা যেখানে জরায়ুর ভিতরের আস্তরণের মতো টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়। এটি ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব এবং পেলভিসের আস্তরণকারী টিস্যুকে প্রভাবিত করে। যেখানে পেলভিক অঙ্গগুলি অবস্থিত সেই অঞ্চলের বাইরে এন্ডোমেট্রিওসিসের বৃদ্ধি পেতে পারে। এন্ডোমেট্রিওসিস টিস্যু জরায়ুর অভ্যন্তরে আস্তরণের মতো কাজ করে - এটি প্রতিটি মাসিক চক্রের সাথে ঘণিভূত হয়, মাসিকের সময় ভেঙ্গে যায় এবং রক্তপাতের সাথে বের হয়ে যায়। কিন্তু এটি এমন জায়গায় বৃদ্ধি পায় যেখানে এটি সাধারণ নারীদের থাকে না। এটি সহজে শরীরকে ছেড়ে যায় না। এন্ডোমেট্রিওসিস যখন ডিম্বাশইয়ে তৈরি হয়, তখন এন্ডোমেট্রিওমাস নামক সিস্ট তৈরি হতে পারে। এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে মাসিকের সময়। এর কারণে প্রজনন সমস্যাও হতে পারে।

নারী প্রজনন তন্ত্র সম্পর্কে কিছু কুসংস্কার বা ভুল তথ্য কি?

যেহেতু অনেক জনগোষ্ঠীর মাঝে যৌন শিক্ষা (sex education) সাধারণ কোনো বিষয় নয়, তাই একে ঘিরে অনেক কুসংস্কার বা ভুল তথ্য রয়েছে যা মানুষের মধ্যে আলোচিত হয়। 
নীচে কিছু সাধারণ কুসংস্কার এবং এর সত্য সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরা হলঃ

কুসংস্কার ১ঃ যদি একজন মহিলার স্তন বড় হয়, তাহলে এর মানে হল সে অনেকের সাথে যৌন সম্পর্ক করেছে।

সঠিক তথ্যঃ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা! একজন নারীর স্তনের আকার জেনেটিক্সের উপর ভিত্তি করে। এটি কারোর যৌন ইতিহাস প্রতিফলিত করে না।

কুসংস্কার ২ঃ যদি কোনো মেয়ের মাসিক তাড়াতাড়ি হয়, তার মানে সে সেক্স করেছে।

সঠিক তথ্যঃ এটা সম্পূর্ণ অসত্য। আট বছরের কম বয়সী মেয়েদেরও মাসিক হতে পারে।

কুসংস্কার ৩ঃ একজন মহিলা তার যোনি থেকে প্রস্রাব করেন।

সঠিক তথ্যঃ এটা মিথ্যা। একজন মহিলার যৌনাঙ্গে তিনটি ছিদ্র থাকে। যোনিপথ দিয়ে সন্তান জন্মদান, যৌন মিলন এবং সেক্স-টয় কিংবা ট্যাম্পন ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত হয়। মূত্রনালী হল প্রস্রাব করার জন্য এবং মলদ্বার হল মল বের করার জন্য।

কুসংস্কার ৪ঃ একজন মহিলার যোনিমুখ (vulva) যৌনতার জন্য সম্পূর্ণ লোমহীন হওয়া উচিত।

সঠিক তথ্যঃ এটা মিথ্যা। একজন মহিলার যোনিমুখে লোম থাকা স্বাভাবিক।

কুসংস্কার ৫ঃ যদি কোনও মহিলার যোনিমুখে লোম থাকে, এর অর্থ তিনি কুমারী নন।

সঠিক তথ্যঃ এটি ভুল। যখন একটি মেয়ে বয়ঃসন্ধিকালে প্রবেশ করে তখন স্বাভাবিকভাবে যোনিমুখে লোম তৈরি হয়। 

কুসংস্কার ৬ঃ শুধুমাত্র বিবাহিত মহিলারা ট্যাম্পন (tampons) ব্যবহার করতে পারেন।

সঠিক তথ্যঃ এটা সত্য নয়। যে কোনো নারী মাসিকের সময় যোনিপথে ট্যাম্পন ব্যবহার করতে পারেন।